তারাবির নামাজের নিয়ত, দোয়া ও মোনাজাত (বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ) জেনে নিন

দীর্ঘ এক বছর পর আবারও রহমতের মাস রমজানুল মোবারক ফিরে এসেছে এই মাসে আমাদেরকে তারাবি, সেহরি , ইফতার সময় অনুযায়ী কিছু দোয়া ও নিয়ত করতে হয়।

তারাবি শব্দটি বহুবচন। এর একবচন হলো তারবিহ। এর আভিধানিক অর্থ হলো বিশ্রাম, স্বস্তি, শান্তি ও প্রশান্তি। রমজান মাসে এশার নামাজের পর যে সুন্নতে মুয়াক্কাদা ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়, তাকে তারাবির নামাজ বলে (Taraweeh prayer)

তারাবির নামাজ ৮ না ২০ রাকাত:

তারাবির নামাজ এক ধরনের নফল এবাদত । এটির নির্দিষ্ট কোনো রাকাতের কথা বলা হয়নি, দুই রাকাত করে ৮ রাকাত, ১০ রাকাত, ১২ রাকাত, ১৬ রাকাত, ২০ রাকাত পড়া যায়। কত রাকাত হবে, রাসুলুল্লাহ (স.) তা নির্ধারণ করে যাননি।

পুরুষদের তারাবির নামাজ মসজিদে জামাতের সঙ্গে আদায় করা সুন্নত। তারাবির নামাজে কোরআন শরিফ খতম করা সুন্নত। নারীদের জন্যও ২০ রাকাত সুন্নত। তারাবির নামাজের সময় হলো এশার নামাজের পর থেকে ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত।

তাই এই মাসের প্রধান যে কাজগুলো আমাদের যেহেতু করতে হবে তা আমরা শুরুতে জেনে নেই। হাদীসে রয়েছে যে আমলের প্রতিদান নিয়তের উপর নির্ভরশীল তাই ওই মাসের প্রধান কাজগুলো গুরু শুরুতেই নিয়ত করতে হবে রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া এই রমজান মাসে রোজা রাখার জন্য যে তারাবির নামাজের দোয়া রোজার নিয়ত ও ইফতারের পূর্বে ইফতারের দোয়া পড়তে হয় অনেকে আরবিতে দোয়া পড়তেছে আবার অনেকে আরবি না জানার কারণে বাংলা নিয়ত করে বা দোয়া পড়ে। নিয়ত বা দোয়া এটা আরবিতে বলতে হবে এমন কোনো নিয়ম না বিধিবিধান নেই।

কেউ আরবিতে বলতে পারলে আরবিতে বলবে, কেউ চাইলে নিজের মাতৃভাষায় বলতে পারবে এতে কোন নিষেধ বা বাধ্যবাধকতা। নেই অনেকেই লোক লজ্জার কারনে এই দোয়া সমূহ শিখতে চায় না আবার অনেকেই ভুল করে, উচ্চারণ ঠিকভাবে হয় নাই তাই জেনে নেই কিভাবে আপনি এই দোয়া করবেন তা অর্থসহ উচ্চারণ সেখানে দেওয়া হয়েছে।

তারাবির নামাজের সহীহ নিয়ম ও দুয়া: 

এশা’র চার রাকাত ফরজ নামাজ ও ২ রাকাত সুন্নত আদায় করার পর এবং বিতর নামাজের আগে ২০ রাকাত তারাবীহ্ নামাজ আদায় করতে হয়।

তারাবির নামাজের নিয়ত:

نويت ان اصلى لله تعالى ركعتى صلوة التراويح سنة رسول الله تعالى متوجها الى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر

(নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা, রকাআতাই সালাতিত তারাবিহ সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তা’আলা, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি, আল্লাহু আকবার।)

তারাবি নামাজের দোয়া

৪ রাকাত তারাবি আদায় করে বিশ্রাম বা বিরতির পর  ব্যাপক প্রচলিত একটি দোয়া রয়েছে। যা দেশের প্রায় মসজিদে পড়া হয়। আর তাহলো-

سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ سُبْحانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِيْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدَ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّنا وَرَبُّ المْلائِكَةِ وَالرُّوْحِ

উচ্চারণ : ‘সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা জিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিব্রিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়ামুত আবাদান আবাদ; সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ।’

তারাবি নামাজের মোনাজাত

অনেকেই ৪ রাকাত পর পর মোনাজাত করে থাকেন। আবার অনেকে পুরো নামাজ শেষ করে মোনাজাত একসঙ্গে মোনাজাত দেন। তবে নামাজ শেষ করে বিতর পড়ে মোনাজাত দেওয়াই উত্তম।

اَللَهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ يَا خَالِقَ الْجَنَّةَ وَالنَّارِ- بِرَحْمَتِكَ يَاعَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيْمُ يَا سَتَّارُ يَا رَحِيْمُ يَاجَبَّارُ يَاخَالِقُ يَابَارُّ – اَللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ- بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনাননার। ইয়া খালিক্বাল জান্নাতি ওয়ান নার। বিরাহমাতিকা ইয়া আঝিঝু ইয়া গাফফার, ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তার, ইয়া রাহিমু ইয়া ঝাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া বার্রু। আল্লাহুম্মা আঝিরনা মিনান নার। ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝির। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।’