গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের মেলা। কোকিল গাইছে গান। ভমোর করছে খেলা। প্রকৃতি সেজেছে নতুন সাজে আগুন লাগা গাছে বইছে দক্ষিণা হাওয়া। এই বুঝি এলো বসন্ত!!! আজ পহেলা ফাগুন।
‘ফুল ফুটুক আর না ফুটুক/আজ বসন্ত। ‘ কিন্তু বাস্তবতা হলো, বসন্তকালে ফুল ফুটবেই। গ্রামবাংলার বাতাসে ভেসে বেড়ায় ফুলের সুগন্ধ। এই সময়ে বাগানে বাগানে সৌন্দর্যের আলো ছড়ায় জুই, চামেলি, রজনীগন্ধ্যা, শিমুল, হাসনাহেনা, গোলাপ, লাল গুল মেহের (কৃষ্ণচূড়া) আর হলুদ রঙের রাধাচূড়া।
পহেলা ফাল্গুন ২০২৩ কবে?
২০২৩ সালের পহেলা ফাল্গুন কত তারিখ ১ ফাল্গুন ১৪২৯ রোজ রবিবার এই বছর পয়েলা ফাল্গুন দিবস পালন করা হবে যদি ও তার পরের দিন বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালন করা হবে।
পহেলা ফাল্গুন ২০২৩ ইংরেজি কত তারিখ জেনে নিন
২০২৩ সালের পহেলা ফাল্গুন কত তারিখ। পহেলা ফাল্গুন ২০২৩ ফেব্রুয়ারি মাসের ১৪ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে। তাই আপনারা যারা দিনটিকে ভালোভাবে পালন করতে চান
পহেলা ফাল্গুনের সাজ
আজ পহেলা ফাল্গুন। আর ফাল্গুন মানেই বসন্তের শুরু। আবার বসন্ত মানেই প্রকৃতির নতুন রূপ। এই সময় প্রকৃতি সাজে এক নতুন রূপ নিয়ে। তবে এই সাজ শুধু প্রকৃতিতেই থেমে থাকে না। এই সাজ ছড়িয়ে পরে সকল নারী-পুরুষের প্রেমিক প্রেমিকাদের মনেও। তাইতো সবাই বেছে নিয়েোছ বাসন্তী রঙের পোশাক। প্রকৃতির সাথে মিল রেখে নারীরা সেজে উঠে ফাল্গুনের সাজসজ্জায়।
পহেলা ফাল্গুনের সাজসজ্জা যেমন হবে
১) শাড়িতে ফাল্গুনি সাজ!
বাঙালি ঐতিহ্যকে প্রাধান্য দিয়ে আটপ্রৌড়ে করে বাসন্তী রঙা সুতি, তাঁতের টাটকা শাড়িতে নিজেকে জড়াতে পারেন বসন্ত বরণে। তবে প্রকৃতির রঙ বদলে সামিল হতে সবুজের বিভিন্ন শেড যেমন- কচি পাতা সবুজ, গাড় সবুজ ইত্যাদি রঙ বেছে নিতে পারেন। আবার হলুদ-কমলা গাঁদা ফুলের মতো প্রষ্ফুটিত হতে পারেন। এছাড়াও নিজেকে আবির্ভাব করতে পারেন সাদা শাড়িতে নানান রঙ-বেরঙের ঢংয়েও। আপনার পছন্দ মতন যে কোনটিতেই হয়ে উঠতে পারেন অপরূপা।
২) ফাল্গুনের পরিচ্ছদ কেমন হবে?
পোশাক তো গেল,পরিচ্ছদের কী হলো? পোশাকে- পরিচ্ছদে না মিললে তো একেবারেই চলবে না! শাড়ির সাথে চাই হাত ভর্তি রিনিঝিনি রেশমি কাঁচের চুড়ি। কপালে ভোর বেলার লাল সুর্যের মতো লাল রঙা টিপ আর খোপায় গাঁদার ফুল। গোলাপ, গাঁদার সাথে জারবেরাও এখন শোভা পায় কানের পাশেই।
৩) ফাল্গুনের মেকাপ
পহেলা ফাল্গুন ২০২৩ কবিতা ও উক্তি সমূহ
হে কবি! নীরব কেন-ফাল্গুন যে এসেছে ধরায়, বসন্তে বরিয়া তুমি লবে না কি তব বন্দনায়? – সুফিয়া কামাল
কহিল সে স্নিগ্ধ আঁখি তুলি- দখিন দুয়ার গেছে খুলি? বাতাবী নেবুর ফুল ফুটেছে কি? ফুটেছে কি আমের মুকুল? দখিনা সমীর তার গন্ধে গন্ধে হয়েছে কি অধীর আকুল? – সুফিয়া কামাল
এখনো দেখনি তুমি?” কহিলাম “কেন কবি আজ এমন উন্মনা তুমি? কোথা তব নব পুষ্পসাজ? – সুফিয়া কামাল
তরী তার এসেছে কি? বেজেছে কি আগমনী গান? ডেকেছে কি সে আমারে? -শুনি নাই,রাখিনি সন্ধান – সুফিয়া কামাল
কহিলাম “ওগো কবি, রচিয়া লহ না আজও গীতি, বসন্ত-বন্দনা তব কণ্ঠে শুনি-এ মোর মিনতি।” কহিল সে মৃদু মধুস্বরে- “নাই হ’ল, না হোক এবারে- আমার গাহিতে গান! বসন্তরে আনিতে ধরিয়া- রহেনি,সে ভুলেনি তো, এসেছে তো ফাল্গুন স্মরিয়া – সুফিয়া কামাল
কহিলাম “ওগো কবি, অভিমান করেছ কি তাই? যদিও এসেছে তবু তুমি তারে করিলে বৃথাই।” কহিল সে পরম হেলায়- “বৃথা কেন? ফাগুন বেলায় ফুল কি ফোটে নি শাখে? পুষ্পারতি লভে নি কি ঋতুর রাজন? মাধবী কুঁড়ির বুকে গন্ধ নাহি? করে নি সে অর্ঘ্য বিরচন? – সুফিয়া কামাল
হোক, তবু বসন্তের প্রতি কেন এই তব তীব্র বিমুখতা?” কহিলাম “উপেক্ষায় ঋতুরাজে কেন কবি দাও তুমি ব্যথা?” কহিল সে কাছে সরি আসি- “কুহেলী উত্তরী তলে মাঘের সন্ন্যাসী- গিয়াছে চলিয়া ধীরে পুষ্পশূন্য দিগন্তের পথে রিক্ত হস্তে। তাহারেই পড়ে মনে, ভুলিতে পারি না কোন মতে – সুফিয়া কামাল
হেরো পুরানো প্রাচীন ধরণী হয়েছে শ্যামল-বরনী, যেন যৌবন-প্রবাহ ছুটিছে কালের শাসন টুটাতে; পুরানো বিরহ হানিছে, নবীন মিলন আনিছে, নবীন বসন্ত আইল নবীন জীবন ফুটাতে – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
মধুর বসন্ত এসেছে মধুর মিলন ঘটাতে। মধুর মলয়-সমীরে মধুর মিলন রটাতে। কুহক লেখনী ছুটায়ে কুসুম তুলিছে ফুটায়ে, লিখিছে প্রণয়-কাহিনী বিবিধ বরন-ছটাতে – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তোমার অশোকে কিংশুকে, অলক্ষ্য রঙ লাগল আমার অকারণের সুখে – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আসছে ফাল্গুনে আমরা কিন্তু দ্বিগুণ হবো – জহির রায়হান তোমার প্রজাপতির পাখা আমার আকাশ-চাওয়া মুগ্ধ চোখের রঙিন স্বপন মাখা । তোমার চাঁদের আলোয় মিলায় আমার দুঃখ-সুখের সকল অবসান – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আমাকে পাবে না খুঁজে, কেঁদে কেটে মামুলি ফাল্গুনে – হেলাল হাফিজ বসন্ত এলো এলো এলোরে পঞ্চম স্বরে কোকিল কুহুরে মুহু মুহু কুহু কুহু তানে মাধবী নিকুঞ্জে পুঞ্জে পুঞ্জে ভ্রমর গুঞ্জে গুঞ্জে গুনগুন গানে – কাজী নজরুল ইসলাম
হয়তো ফুটেনি ফুল রবীন্দ্রসঙ্গীতে যত আছে, হয়তো গাহেনি পাখি অন্তর উদাস করা সুরে বনের কুসুমগুলি ঘিরে। আকাশে মেলিয়া আঁখি তবুও ফুটেছে জবা, দূরন্ত শিমুল গাছে গাছে, তার তলে ভালোবেসে বসে আছে বসন্ত পথিক – নির্মলেন্দু গুণ
একঝাক পাখি এসে ঐকতানে , গান গায় এক সাথে ভোর বিহনে, অচানক দুনিয়াটা আজব লাগে, আড়মোড়া দিয়ে সব গাছেরা জাগে, লাল নয় কালো নয় সবুজ পাতা, জেগে ওঠে একরাশ সবুজ পাতা – ফররুখ আহমেদ
পহেলা ফাল্গুন ২০২৩ শুভেচ্ছা বার্তা এসএমএস সমূহ
আমাদের বেশ কিছু পোস্ট আছে যেখানে পহেলা ফাল্গুন ২০২৩ শুভেচ্ছা বার্তা, এসএমএস, মেসেজ, স্ট্যাটাস ও উক্তি আপলোড করা আছে। আপনি চাইলে খুব সহজেই সেসব পোস্ট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে পহেলা ফাল্গুন উদযাপন করতে পারবেন। এছাড়াও এখানে কিছু এসএমএস প্রদান করা হল।
কিছু ইচ্ছে, সাড়া দিচ্ছে এ বসন্ত রাত জাগা
নিতি নৃত্যে, ফুল ছিড়তে শুধু তোমার কথাই ভাববো
আজ হাওয়া বেপরোয়া দিলো সন্ধ্যে পাখির ঝাঁক
এই বিকেল আর বেল ফুল হৃদ মাঝারে থাক ।
ধরণী আজ উঠিছে সাজি
মনের দক্ষিণ দার খুলে দেবো আজি
মাতাল হবো সুখে আজকে অনন্ত
সার্থক হবে ফাগুন, সার্থক বসন্ত।
বসন্ত মাস ভালোবাসায় ভরপুর
তুমি আর আমি ঘুরবো সারা দুপুর
বসন্তের ফুল গুজে দেবো তোমার খোপায়
ভালোবাসার এটাই তো সেরা সময়।
আসমান জমিন মিশে গেছে বসন্তেরই পরশে
সবার হৃদয় ছুয়ে গেছে অকাল প্রেমের আবেশে
ভালোবাসার জোয়ার ওঠে বসন্তের কূলে,
সেই জোয়ারে যুব-যুবতীর প্রাণ ওঠে দুলে।
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে যেই মেলেছি আখি
সামনে যকে দেখেছে সেজন কি তুমি?
বাসন্তি রঙ শাড়ীতে আজ লাগছে অপরূপা
খোলা চুলে জবা ফুলে বেঁধেছো ঐ খোপা।
বসন্ত বাতাসে সই গো বসন্ত বাতাসে
বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ আমার বাড়ি আসে
সই গো বসন্ত বাতাসে সই গো বসন্ত বাতাসে।