সেহেরি নিয়ত ও ইফতারের দোয়া (বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ) জেনে নিন।

সেহেরি নিয়ত ও ইফতারের দোয়া জেনে নিন। দীর্ঘ এক বছর পর আবারও রহমতের মাস রমজানুল মোবারক ফিরে এসেছে এই মাসে আমাদেরকে তারাবি, সেহরি , ইফতার সময় অনুযায়ী কিছু দোয়া ও নিয়ত করতে হয়।

রমজান মাসে রোজাঃ السلام عليكم ورحمة الله وبركاته

রোজার সংজ্ঞা:

আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে ইবাদতের নিয়তে সুবহে সাদিক (সেহরীর শেষ সময় ও ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার সময়) থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার, সহবাস ও রোজা ভঙ্গকারী যাবতীয় কাজ হতে বিরত থাকা।

রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া

সেহেরির আরবি নিয়ত

সেহেরি খাওয়া সুন্নতঃ-
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “সাহরি খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে।” অর্থাৎ শরীরের মধ্যে প্রফুল্লতা ও শক্তি থাকে। (বুখারী, মুসলিম : হা.১০৯৫)

রাসূলুল্লাহ (সা:) আরও ইরশাদ করেছেন, আহলে কিতাব আর আমাদের মুসলমানদের রোযার মধ্যে শুধু সাহরি খাওয়াই পার্থক্য। অর্থাৎ তারা সাহরি খায় না
আর আমরা সাহরি খাই। (মুসলিম-১৮৪৩, তিরমিযী-৬৪২)

যদি ক্ষুধা না থাকে আর খাওয়ারও ইচ্ছা না থাকে, তদুপরি সুন্নতের ওপর আমল করার জন্য, দুই একটা খেজুর খেয়ে নিলে বা এক ঢোক পানি হলেও পান করে নিলে তাহলে সুন্নতের ওপর আমল হয়ে যায়।

রোজা, সেহরী ও ইফতারের কিছু মাসায়েল

*রমজানের রোজার নিয়ত করা ফরজ। নিয়ত ব্যতীত সারাদিন পানাহার ও যৌনতৃপ্তি থেকে বিরত থাকলেও রোযা হবে না।

*মুখে নিয়ত করা জরুরী নয়। অন্তরে নিয়ত করলেই যথেষ্ট হবে, তবে মুখে নিয়ত করা উত্তম। মুখে নিয়ত করলেও আরবীতে হওয়া জরুরী নয়- যে কোন ভাষায় নিয়ত করা যায়। আরবীতে করলে এভাবে করা- نَوَيْتُ بِصَوْمِ الْيَوْمِ অথবা بِصَوْمِ غَدٍ نَوَيْتُ বাংলায় : ‘আমি আজ রোজা রাখার নিয়ত করলাম।’

সেহরি

  • সেহরি খাওয়া জরুরী নয় তবে সেহরি খাওয়া সুন্নত। অনেক ফজিলতের আমল। ক্ষুধা না লাগলে বা খেতে ইচ্ছে না করলেও সেহরির ফজিলত লাভের নিয়তে যা-ই হোক কিছু পানাহার করে নেয়া উত্তম।
  • নিদ্রার কারণে সেহরি খেতে না পারলেও রোজা রাখতে হবে।
  • বিলম্বে সেহরি খাওয়া উত্তম।

نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم

  • উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন আছুম্মা গাদাম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।
  • রোজার বাংলা অর্থ ঃ

হে আল্লাহ পাক! আপনার সন্তুষ্টির জন্য আগামীকালের রমাদ্বান শরীফ-এর ফরয রোযা রাখার নিয়ত করছি। আমার তরফ থেকে আপনি তা কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা , সর্বজ্ঞাত।

 ইফতারের আরবি দোয়া:

  • সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর বিলম্ব না করে তাড়াতাড়ি ইফতার করা মুস্তাহাব। বিলম্বে ইফতার করা মাকরূহ।
  • সূর্য অস্ত যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পরই ইফতার করতে হবে। শুধু ঘড়ি বা আজানের উপর নির্ভর করা ভালো নয়। কারণ তাতে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • সবচেয়ে উত্তম হলো খেজুর দ্বারা ইফতার করা। তারপর কোন মিষ্টি জাতীয় জিনিষ দ্বারা ও তারপর পানি দ্বারা করা ভালো।

*ইফতার করার পূর্বে দোয়া পড়া মুস্তাহাব। নিম্মোক্ত দু‘আটি পড়া যেতে পারে-
اللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ وَعَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ

  • ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়। তাই ইফতারের পূর্বে বা কিছু ইফতার করে বা ইফতার থেকে সম্পূর্ণ ফারেগ হয়ে দোয়া করা মুস্তাহাব।

نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْماَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ وَ اَفْطَرْتُ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِيْمِيْن

  • উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।
  • ইফতারের বাংলা অর্থ ঃ
    হে আল্লাহ তায়ালা আমি আপনার নির্দেশিত মাহে রমাজানের ফরয রোজা শেষে আপনারই নির্দেশিত আইন মেনেই রোজার পরিসমাপ্তি করছি ও রহমতের আশা নিয়ে ইফতার আরম্ভ করছি। তারপর “বিসমিল্লাহি ওয়া’আলা বারাকাতিল্লাহ” বলে ইফতার করা।

তারাবির নামাজের সহীহ নিয়ম ও দুয়া দেখতে ক্লিক করুণ