[JSC, SSC, HSC] সার্টিফিকেট সংশোধন করার সহজ নিয়ম জেনে নিন।

বাংলাদেশ প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ছেলে মেয়ে JSC,JDC,Dakhil,  SSC, HDC BM Alim এর পরিক্ষা দিয়ে থাকেন। অনেকের পাশ করার পর যখন সারটিফিকেট দেওয়ার সময় এই সব ভূল পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। তাই এই সব ভূল সংশোধন করবেন যে ভাবে তা নিলেই আজকের আলোচনা।

সার্টিফিকেটে নাম সংশোধন করার বৃত্তান্ত : যে কোন বোর্ডে অফলাইনে আবেদন করতে হয়, অনলাইনে সংশোধন হয় না। তাই আপনাকে সশরীরে বোর্ডে এসে আবেদন করতে হবে। কোনো প্রকার দালাদের খপ্পরে না পড়ে সহজে আপনার জেএসসি /এসএসসি /এইচএসসি সার্টিফিকেট এর নাম সংশোধন করতে নিন্মলিখিত ধাপ সমূহ অনুসরণ করুন।

সার্টিফিকেটে সংশোধন করার ধাপ সমূহ

ধাপ ১ : যে সার্টিফিকেট এর নাম সংশোধন করুন না কেন, আপনার পিএসসি এর সার্টিফিকেট লাগবেই! তাই সবার আগে পিএসসি এর সার্টিফিকেট এ সব নাম ঠিক আছে কি না তা দেখুন। যদি ঠিক না থাকে তবে আপনার উপজেলার শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করে ঠিক করে নিন। উল্লেখ্য অনেক শিক্ষা অফিসার পিএসসি’র সার্টিফিকেট সংশোধন এর জন্য নোটারী পাবলিকের নাম সংশোধন এর এফিডেভিট চায়। (এফিডেভিট নিয়ে নিচে বিস্তারিত বলছি)
ধাপ ২ : আপনার জন্ম সনদে( অবশ্যই বাংলা ও ইংরেজি দুটোই লাগবে) সব নাম সঠিক থাকা লাগবে। যদি সব ঠিক থাকে তবে সমস্যা নেই, নাহলে ইউনিয়ন পরিষদের গিয়ে সেসব সংশোধন করতে হবে।
ধাপ ৩ : দিনাজপুর বোর্ড এর ওয়েবসাইট থেকে নাম সংশোধনীর একটা ফর্ম প্রিন্ট করে নিন। ফর্মটি ভালোভাবে পড়ুন এবং সাবধানতার সাথে সব তথ্য পূরন করুন।
ধাপ ৪ : এবার ফর্ম টি নিয়ে যে স্কুলে আপনি মাধ্যমিক পড়াশুনা করেছেন সেখানে যান। কারণ আপনার নাম সংশোধন করার সুপারিশ সহ স্বাক্ষর স্কুলের প্রধান শিক্ষক করবেন।( শুধু এইচএসসি সার্টিফিকেট সংশোধন করার ক্ষেত্রে আপনাকে কলেজ প্রধানের সুপারিশ লাগবে, আর যদি সব সার্টিফিকেট সংশোধনের প্রয়োজন হয় তবে স্কুল প্রধানের সুপারিশ হলেই হবে, তখন আর কলেজে যেতে হবে না।)

স্কুলে গিয়ে আপনার আরেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো ষষ্ঠ শ্রেণীর ভর্তি রেজিস্ট্রার এর ফটোকপি সংগ্রহ করা( প্রধান শিক্ষক এর থেকে সত্যায়িত করে নিবেন)। (ভর্তি রেজিস্ট্রারে আপনি যে নাম সংশোধন করতে চান দেখুন সেটি ঠিক আছে কি না। না হলে সেটি সংশোধন করে নিয়ে ফটোকপি করুন, উল্লেখ্য অনেক সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকও নোটারী পাবলিক এর নাম সংশোধন এর এভিডেভিড ছাড়া ভর্তি রেজিস্ট্রারে কিছু সংশোধন করতে চান না )

আপনার এককপি পাসপোর্ট সাইজের ছবিও স্কুল প্রধানের কাছ থেকে সত্যায়িত করে নিবেন। (আবেদন করার সময় ১কপি ছবি লাগে, অনেকেই সত্যায়িত করে না, তবে করে নিলেই ভালো)
ভর্তি রেজিস্ট্রার এর ফটোকপি সংগ্রহ আর নাম সংশোধন এর ফর্মে প্রধান শিক্ষক এর সুপারিশ সহ স্বাক্ষর নেয়া হয়ে গেলেই আপনার স্কুলে কাজ শেষ।

-নোটারী পাবলিক এর নাম সংশোধনীর এফিডেভিট করবেন কি না এই নিয়ে অনেক দোটানায় আমিও পড়েছিলাম, উপজেলা শিক্ষা অফিসার এফিডেভিট না চাইলেও স্কুলের প্রধান শিক্ষক এফিডেভিট ছাড়া ভর্তি রেজিস্ট্রার সংশোধন করেননি তাই বাধ্য হয়ে এফিডেভিট করতে হয়েছে। তাই এরকম সিচুয়েশন এড়াতে প্রথমেই এফিডেভিট করে নেয়া ভালো। জেলার নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে যেকোনো আইনজীবীর সাহায্য নিয়ে খুব সহজেই এফিডেভিট করা যায়। খরচ হবে সর্বোচ্চ ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা।
যদি এফিডেভিট করেন তবে তার কয়েক ফটোকপি করে রাখবেন আর তার এক কপি বোর্ডে জমা দিবেন।
ধাপ ৫ : (ফটোকপি সত্যায়িত করা)
নিন্মলিখিত কাগজ গুলোর ফটোকপি প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার মাধ্যমে সত্যায়িত করে নিন
★যে সার্টিফিকেট সংশোধন করতে চান, সেই সার্টিফিকেট সংক্রান্ত সকল ডকুমেন্ট ( প্রবেশপত্র, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, নম্বর পত্র, সনদপত্র) তবে শুধু এইচএসসি সংশোধন করতেও জেএসসি ও এসএসসি উভয়ের সকল ডকুমেন্টও সংযুক্তি করতে হবে।
★জন্ম সনদ (বাংলা ও ইংরেজি উভয়)
★পিএসসি এর সার্টিফিকেট
★পিতা/মাতার নাম সংশোধন এর ক্ষেত্রে তার/তাদের ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর ফটোকপি ( সত্যায়িত লাগবে না)
ধাপ ৬ : এবার অনলাইনে দিনাজপুর বোর্ডের ওয়েবসাইটে গিয়ে সোনালী সেবার মাধ্যমে নাম সংশোধনীর জন্য জেএসসি এর জন্য ১০০০ ও এসএসসি ও এইচএসসির জন্য ১০০০ ( তিনটি করলেও মোট ২০০০) টাকার রশিদ প্রিন্ট করে নিয়ে নিকটস্থ সোনালী ব্যাংকে গিয়ে জমা দিতে হবে। একটি রশিদের তিন অংশের মধ্যে একটি ব্যাংক নিবে, বোর্ডের অংশ টি আপনার আবেদনের সাথে যুক্ত করতে হবে। আর শেষ অংশটি নিজের কাছে রেখে দেবেন।
আপনার কাজ শেষ, এবার সব ডকুমেন্টস নিয়ে বোর্ডের নাম ও বয়স সংশোধন শাখায় গিয়ে জমা দেবেন।
দ্রষ্টব্য : উক্ত শাখায় বসা কর্মকর্তা বাদে কোনো দালালের (কর্মচারী) কাছে জমা দেবেন না। তাহলে অতিরিক্ত খরচের দিকে যেতে হবে।
আপনার ডকুমেন্টস গুলো যাচাই করার পর আপনাকে একটা নিদিষ্ট দিনে ঢাকবে (১ মাসের মধ্যেই মুলত বোর্ড সভার ডাক পড়ে) ওইদিন আপনার সকল মূল কাগজপত্র(সকল মূল সনদ, নম্বর পত্র, প্রবেশপত্র, রেজিষ্ট্রেশন কার্ড, পিএসসির সনদের মূল কপি, মূল জন্ম সনদ, বাবামায়ের নামের ক্ষেত্রে তাদের মূল ন্যাশনাল আইডি কার্ড, ষষ্ঠ শ্রেণির ভর্তি রেজিস্ট্রার খাতা ইত্যাদি নিয়ে উপস্থিত হতে হবে) যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষ আপনার জিম্মায় স্কুলের ভর্তি রেজিস্ট্রার দেবে না তাই একজন স্কুল কর্মকর্তা/পিয়নকে সাথে নিয়ে আসতে হবে। সভা শেষে আপনার নাম সংশোধন করে বোর্ড কর্তৃপক্ষ নোটিশ জারি করবে।
এবারে আপনি ফ্রেস কপি নিতে চাইলে প্রতিটা কপির জন্য ৭৫০ করে টাকা সোনালী সেবার মাধ্যমে জমা দিতে হবে। তার মানে আপনি এসএসসির প্রবেশপত্র, রেজিষ্ট্রেশন কার্ড, নম্বরপত্র, সার্টিফিকেট এই চারটির ফ্রেস কপি নিতে চাইলে মোট (৭৫০৪) ৩০০০ টাকার সোনালী সেবার মাধ্যমে জমা দিতে হবে।
মূল সার্টিফিকেট সমূহ সোনালী সেবার রসিদ সহ বোর্ডের সনদ শাখায় জমা দিতে হবে। আশা করি ৭ দিনের ভেতরে আপনার ফ্রেস সার্টিফিকেট সমূহ পেয়ে যাবেন। *সংগৃহীত
আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন।