BTS -এর গায়ক কেনো ইসলাম ধর্ম গ্রহন করলেন!!!

কিম কিয়ুন-উ  জন্ম 8 এপ্রিল, 1983 সাল। পেশাগতভাবে জে নামে পরিচিত, একজন দক্ষিণ কোরিয়ার গায়ক এবং অভিনেতা। তিনি EDM ত্রয়ী TraxX-এর সদস্য এবং SM Entertainment-এর প্রজেক্ট গ্রুপ SM The Ballad-এর একজন প্রাক্তন সদস্য। জে কিম সম্প্রতি প্রকাশ করেছেন যে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছেন এবং তার পরিবর্তন করে  দাউদ কিম। এখন তিনি একজন ইউটিউবার এবং ভ্লগার।

“কোরিয়ায় ঈদ” এবং “মিউজিক কি হারাম?” এর মতো ভিডিওর শিরোনাম সহ তার প্রথম দিকের অনেক ভিডিও তাকে ইসলাম ধর্মের অন্বেষণ করতে দেখায়। তিনি সিউল সেন্ট্রাল মসজিদে তার ইসলাম ধর্ম গ্রহনের একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন, মুসলিম হওয়ার ঘোষণা। এবং তার মুসলমান হওয়ার গল্পটা শেয়ার করলেন বাংলাদেশে এসে।

আসলে এটা একটা লম্বা কাহিনি। অনেক কারন ছিলো, ধর্ম পরিবর্তন করা সহজ নয়। যেহেতু আমি কোরিয়ায় থাকি,এটি ইসলামিক দেশ নয়। প্রায় চার বছর আগে গায়ক ছিলাম। আমি অন্যান্য দেশে কনসার্ট করছিলাম, কে – পপ কনসার্ট। ইন্দোনেশিয়া, তিউনিসিয়া এবং অন্যান্য দেশে। আর সেখানে গিয়ে আমি প্রথমবার মুসলমানদের দেখেছিলাম।

মুসলমান নামে প্রতিহিঙ্ঘা কেন?

আমি জানতাম না মুসলমানরা আসলে কেমন আমি ইসলাম সমপর্কে অল্প জানতাম।কারন কোরিয়ায় আসলে ইসলাম নিয়ে খুব নেতিবাচক কথা বলা হয়না। আমি যখন ছোট ছিলাম,৯১১ ঘটনা ঘটে। তখন ইসলামকে নিয়ে অনেক নেতিবাচক বিষয় শুনেছি।

তারা বলে মুসলমান দের মানবাধিকারের ব্যপার তো আছে। আমি যখন ইন্দোনেশিয়া যাই, মুসলমানদের প্রথম দেখি। সত্যিই আমি অবাক হই তারা পুরোপুরি আলাদা। তারা দয়ালু, সত্যিই দয়ালু, অনেক উদার। তারা অন্যদের সাহায্য করতে চায় এবং তারা সত্যিই আমাকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছিলো।

হিজাব পড়া নারী দেখে কথা বলে আকৃষ্ট হয়ে ইসলাম গ্রহন করেছি।

তাই আমার ধারণা সম্পূর্ণ বদলে যায়।আমি তখন সত্যিই অবাক হয়েছিলাম।আমি যখন কোন কনসার্টে যেতাম তখন হিজাব পড়া অনেক নারী দেখতাম।কনসার্টের পরে আমি কোনো এক নারীকে জিজ্ঞাসা করি আপনি হিজাব পরেন কেন? আমি সত্যিই কৌতুহলী ছিলাম কারণ এটা আমার জন্য অদ্ভুত ছিল!কোরিয়াতে এ ধরনের কাপড় পরা সত্যিই খুব অদ্ভুত ব্যাপার।

আমার জীবনের কোন উদ্দেশ্য ছিল না

আমি ওই নারীকে জিজ্ঞাসা করলাম আপনি কেন হিজাব পরেন এবং এটা কি আপনাকে কেউ পড়তে বাধ্য করেছে? সে তখন উত্তর দিয়েছে না, আমি আমার পছন্দ মতোই হিজাব পরি।এটা আমার আল্লাহতালা থেকে দেওয়া এটাই আমার পরিচয়।আমি খুবই মূল্যবান তাই আমি নিজেকে ঢেকে রাখে এবং আমি খুবই গর্বিত।কেউ আমাকে জোর করে নাই আমি নিজেই এটি বেছে নিয়েছি। আমি আগে ভেবেছিলাম ধর্ম এমন কিছু যা আমাকে কিছু করতে বাধ্য করে। কিন্তু সে এতটাই গর্বিত ছিলো, তার শক্তি এবং ভাবই আমাকে অনেক প্রভাবিত করেছে।

আমি ভাবলাম কিছু একটা অবশ্যই আছে,অবশ্যই কিছু একটা আছে। আমার জীবনে নিময়কানুন ছিলো কিন্তু এর আগে আমার জীবনের কোন উদ্দেশ্য ছিল না। আমি জানতাম না আমি কোথায় যাচ্ছি কারন কোরিয়ান সমাজে সত্যিই তুলনা করা হয় অনেক তাই আমারও আমরা অনেক। তাই আমি অনেক ডিপ্রেশনে ছিলাম। কিন্তু যেই মুসলমানদের অনেক খুশি দেখছিলাম তখন আমার মনে হল তারা জীবনের উদ্দেশ্য জানে। তারা যে দিক নির্দেশনা দিচ্ছে তা সত্যিই একটি সুন্দর পথ মনে হলো।

পবিত্র কুরআন পড়া শুরু করলাম

আমি যখন কোরিয়ায় ফিরে আসলাম, তখন আমার মাথায় প্রতিদিন তার কথাগুলো ঘুরছিলো। কেন সে এত খুশি ছিল, কেন সেখানে মুসলমান এত উদার। এবং মনে হচ্ছিল তারা অবশ্যই কিছু জানে যা আমি জানিনা। আমি ইসলাম সম্পর্কে অধ্যয়ন করার সিদ্ধান্ত নিলাম। পবিত্র কুরআন পড়া শুরু করলাম, আমি মসজিদে যাওয়ার চেষ্টা করলাম এবং কিভাবে কাজ করতে হবে তাদের অনুসরণ করার চেষ্টা করলাম। নামাজ পড়লাম এবং এক মাস রোজা রাখলাম কিন্তু আমি তখন মুসলিম না হলেও রোজা রেখেছি এবং মুসলমানদের সাথে অনেক কথা বলেছি ইসলাম কি এবং এ থেকে কি শিখতে পারি সে ব্যপারে কথা বলেছি। এরপর আমি বুঝতে পারি কোরআন আমাদের জীবনের নিখুঁত গাইড। এবং যখন কেউ কিছু বিশ্বাস করে, যখন কেউ আল্লাহ কে বিশ্বাস করে তখন এটি তার মনের আশ্চর্যজনক প্রশান্তি এনে দেয়।

ইসলাম তৃপ্তি এবং পূর্ণ সুখ এনে দেয়।

তৃপ্তি এবং পূর্ণ সুখ এনে দেয়।কারণ কোরিয়ায় কৃতিত্ব অর্জন খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেমন একটি ভালো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার প্রচুর অর্থ থাকা বড় বাড়ির মালিক হওয়া মালিক হওয়া পার্টি করা এগুলো কি তারা সুখ মনে করে কিন্তু এগুলি খুবই সামরিক এবং ক্ষণস্থায়ী। কিন্তু আপনি যদি আল্লাহকে বিশ্বাস করেন আল্লাহর অনুগত্য করেন আপনি যদি জীবনের পথ এবং জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পান তাহলে তা আপনাকে পরিপূর্ণ তৃপ্তি প্রকৃত সুখ এবং প্রকৃত শান্তি এনে দিবে। আমি এটা উপলব্দি করার পর মনে করলাম আমার এই ধর্মে বিশ্বাস করা উচিত কিন্তু আমি এগুলোর মুখোমুখি হয়েছি কারণ, কেউ একজন এই পৃথিবী সৃষ্টি করেছে।

আমি পুরোপুরি বিশ্বাস করলাম এক মাত্র একজন আল্লাহ।

আমি আল্লাহ এবং আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম কে বিশ্বাস করি। তিনি আমাদের শেষ নবী আমি বিশ্বাস করি তাই মুসলিম না হওয়ার কোন কারন নেই। তাই আমি মসজিদে গিয়ে কলেমা শাহাদাত পড়ি, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মদ রাসুলুল্লাহ তারপর মুসলমান হয়ে যাই এবং এটাই আমার মুসলমান হওয়ার গল্প।