যে কারনে আজ চাঁদপুরে ঈদ হয়ে গেল

আফগানিস্তান, নাইজার ও মালিতে চাঁদ দেখা যাওয়ায় এই সব দেশের নেয় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের শমেসপুর গ্রামের কিছু অংশের মানুষ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন আজ।

কেন ১দিন আগে ঈদ

আরব দেশ গুলো সাথে মিল রেখে আজ কোরবানি দিচ্ছে এবং ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত করছে চাঁদপুর এর এই ৪০টি গ্রাম।

আজ শনিবার ০৯ জুলাই ২০২২ হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরিফ মাদরাসা মাঠে গেলে দেখা যায়, সাদ্রা হামীদিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা মাঠে ঈদের জামাতে অংশ নেওয়ার জন্য মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন।

একদিন আগে ঈদের জামাত

সকাল সাড়ে ১০টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানান সাদ্রা দরবার শরিফের পীর মুফতি আল্লামা যাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানী। তিনি জামাতে ইমামতি করবেন।

এদিকে গত বছরের মতো এবারও বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে আগাম ঈদ উদযাপনকারীদের মধ্যেই দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তাদের মধ্যে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এ বিষয়ে ওনাদের বক্তব্য যেহেতু হানাফি, মালেকি ও হাম্বলি— এ তিন মাজহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে পৃথিবীর পশ্চিম প্রান্তেও যদি চাঁদ দেখা যায় আর সে সংবাদ যদি নির্ভরযোগ্য মাধ্যমে পৃথিবীর পূর্ব প্রান্তেও পৌঁছায়, তাহলে পূর্ব প্রান্তের মুসলমানদের জন্য রোজা রাখা/ হজ্জ পালন ফরজ এবং ঈদ করা ওয়াজিব।

তাই শনিবার আফগানিস্তান, নাইজার ও মালিতে চাঁদ অনুযায়ী ঈদ পালিন করতে দেখে গেছে। সে অনুযায়ী ঈদু উদযাপন করছি। পাশাপাশি ঢাকার সদরঘাটস্থ খানকা, আসকোনা এবং পটুয়াখালীর বদরপুর দরবার শরিফে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। চাঁদ দেখার বিষয়টি যথাসময়ে পৌঁছে দিতে না পারায় অনেক গ্রামে ঈদ উদযাপন হয়নি। তারা আগামীকাল ঈদ উদযাপন করবেন।

তবে চাঁদপুর সবাই আজ ঈদ করছে না। এই বিষয়ে   সাদ্রা দরবার শরিফের আরেক পীর মো. আরিফ চৌধুরী বলেন, আমরা ঈদ করছি না। আমার চাচারা ঈদ উদযাপন করলেও আমাদের কাছে তা গ্রহণযোগ্য মনে হচ্ছে না। আমরা সোমবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করব।

স্থানীয়রা জানান, সারা দেশে যেদিন রমজান বা জিলহজ্ব মাসের চাঁদ শুরু হয়, সাদ্রা ও শমেসপুর গ্রামে তার আগের দিন রোজা পালন শুরু হয়ে যায়। আজ শনিবার এ গ্রামের যারা ঈদ পালন করছেন তারা । আর গ্রামের বাকি অংশ রবিবার ঈদ উদযাপন করবে, তাদের পালন করা হবে।

উল্লেখ্য, আরব দেশগুলোর সঙ্গে সংগতি রেখে প্রতিবছর চাঁদপুরের তিনটি উপজেলার ৪০ গ্রামে ঈদুল উল আজহা উদযাপিত হয়। সাদ্রা দরবার শরিফের অনুসারীরা ৯৩ বছর ধরেই প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে সাদ্রাসহ ৪০টি গ্রামে ঈদ উদযাপন করে থাকে।

সাদ্রা ছাড়াও একদিন আগে ঈদ উদযাপন করা গ্রামগুলো হলো হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, শ্রীপুর, মনিহার, বড়কুল, অলীপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর, ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, বাসারা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট, মতলবের মহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও ও বেলতলী।

এ ছাড়া চাঁদপুরের পাশের জেলা নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা ও শরীয়তপুর জেলার কয়েকটি স্থানেও বিশ্বমুফতি আল্লামা মাওলানা ইছহাক চৌধুরীর অনুসারীরা এক দিন আগে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করেন