করোনার টিকা আপনি কখন নিতে পারবেন না? জেনে নিন corona.gov.bd

কোভিড-১৯ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে টিকা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি হলেও, কোন সময়ে আপনি টিকা নিতে পারবেন আবার শরীরের কোন পরিস্থিতিতে টিকা নেওয়া যাবে না। আসুন টিকা নেওয়ার আগে জেনে নেই।

করোনার ভেকসিন বা টিকা কখন নিবেন

শরীরের সব পরিস্থিতিতে টিকা নেওয়া যাবে না। জেনে নিন কোন পরিস্থিতিতে টিকা নেওয়া যাবে না।
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- corona gov bd

কোভিড-১৯ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে টিকা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি হলেও, শরীরের সব পরিস্থিতিতে টিকা নেওয়া যাবে না। জেনে নিন কোন পরিস্থিতিতে টিকা নেওয়া যাবে না।

কোভিড-১৯ টিকা কখন নেওয়া যাবে না

করোনাভাইরাস মহামারি মানুষের নিত্যকার জীবনকে বদলে দিয়েছে। গত দুই বছর যাবত নানা সময়েই ভাইরাসটির সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ঘরবন্দি থাকতে হয়েছে আমাদের। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, দীর্ঘসময় এই ভাইরাসটির সঙ্গে লড়াই করে যেতে হবে আমাদের। তবে টিকা নিলে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে তেমন ঝুঁকি আর থাকবে না। ফলে বাংলাদেশেও ব্যাপক হারে টিকাদান কার্যক্রম চলছে। কয়েক কোটি মানুষ ইতোমধ্যেই টিকা নিয়ে ফেলেছেন, আরও অনেকেই আছেন টিকার অপেক্ষায়।

তবে চিকিৎসকরা বলেছেন, কোভিড-১৯ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে টিকা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি হলেও, শরীরের সব পরিস্থিতিতে টিকা নেওয়া যাবে না। যেসব পরিস্থিতিতে টিকা নেওয়া যাবে না তা নিয়েই আমাদের এ লেখা।

ইউনিসেফ তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী টিকা নেওয়া যাবে কিনা তা নিশ্চিত হতে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। তবে দুই ধরনের শারীরিক পরিস্থিতিতে টিকা নেওয়া উচিত নয়।

কোভিড-১৯ টিকায় যে উপাদানগুলো রয়েছে সেগুলোর বিষয়ে আপনার শরীরে যদি অ্যালার্জিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ইতিহাস থাকে, তবে ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত হবে না।

যদি আপনি বর্তমানে অসুস্থ থাকেন বা আপনার মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখা দেয়।

তবে গবেষকরা এটিও বলেছেন আক্রান্ত কারও করোনা নেগেটিভ হওয়ার চার সপ্তাহ বা এক মাস পর কোনো ধরনের তীব্র করোনা–পরবর্তী জটিলতা না থাকলে টিকা নিতে পারবেন।

অন্যদিকে চিকিৎসকরা বলেছেন, ডায়াবেটিস থাকলে টিকা নিতে কোনো নিষেধ নেই। তবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রেখে এরপর টিকা দিতে হবে।

দীর্ঘমেয়াদী ও জটিল রোগগুলোর ক্ষেত্রে অসুস্থ রোগীরা টিকা নিতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানার কাছে।

তিনি বলেছেন, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ এসব যদি নিয়ন্ত্রণে থাকে তবে চিকিৎসকের পরামর্শে টিকা নেওয়া যাবে।

তিনি আরও বলেছেন, যাদের অ্যালার্জির সমস্যা প্রকট তাদের টিকা না নেওয়াই ভালো। এ ছাড়া যাদের হাঁপানি বা ফুসফুসজনিত অসুখ রয়েছে তাদেরও নেওয়া ঠিক হবে না।

গবেষকরা বলেছেন, অনেক দেশেই সন্তানকে দুগ্ধদানকারী মায়েদের অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, সিনোফার্মসহ সব ধরনের টিকাই দেওয়া হচ্ছে। এতে কারও কোনো সমস্যা বা ক্ষতি হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়নি। বরং মায়ের কাছ থেকে বুকের দুধের মাধ্যমে অ্যান্টিবডি শিশুর শরীরে প্রবেশ করে শিশুকেও সুরক্ষা দেবে।

সুতরাং আমরা জেনে নিলাম স্বাভাবিক শারীরিক সুস্থতার বাইরেও কোন কোন ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ টিকা দিতে হবে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে দেওয়া যাবে না। তবে চিকিৎসকরা সবসময়ই বলে এসেছেন, ভাইরাস থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হলে টিকার কোনো বিকল্প নেই৷

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- করোনা ইনফো

কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের পাশ্বপ্রতিক্রিয়া

যে কোনো টিকা বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা, করোনাভাইরাসের টিকা তার ব্যতিক্রম নয়। আর সেসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয় বিবেচনায় নিয়েই চিকিৎসকরা সেগুলো প্রয়োগ বা সেবনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

কোভিড টিকা শারীরিক প্রক্রিয়ায় গিয়ে আমাদের রোগ প্রতিরোধের স্বাভাবিক ব্যবস্থা বা ইমিউনিটিকে সক্রিয় করে। টিকা নেওয়ার পর ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শক্তি আমাদের শরীর পায়। সেই প্রক্রিয়ায় কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে বলে মত চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের।

কোভিড-১৯ টিকার স্বাভাবিক সেসব পাশ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে অত দুশ্চিন্তা বা উদ্বেগের কারণ নেই। কারণ, পরীক্ষার নানা ধাপ পেরিয়ে এই টিকা শতভাগ নিরাপদ বলে প্রমাণিত হয়েছে। আর এর মাধ্যমে শরীর কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিভিন্ন রকম জটিলতা ঠেকাতে উদ্যমী হয়ে ওঠে।

টিকা গ্রহণের পর একজন ব্যক্তি হাল্কা থেকে মাঝারি ধরনের পাশ্বপ্রতিক্রিয়ার অভিজ্ঞা পেতে পারেন; যার অর্থ হচ্ছে টিকা শরীরে গিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম হচ্ছে।

কোন টিকা দিবেন দেখে নিন।

Top 10 (Covid19) Vaccines Medicine Approved by WHO 2022

Vaccines List

কেন পাশ্বপ্রতিক্রিয়া?

অতীতে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধী টিকাগুলো তৈরি করা হয়েছে ওই রোগে আক্রান্ত না হয়ে শরীরে ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে। তখনও কোনো টিকা নেওয়ার পর শরীরে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতো। এর কারণ হচ্ছে আপনার ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধী কোষগুলো শরীরকে একটা নির্দিষ্টভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে নির্দেশ দিচ্ছে। এটা রক্ত সঞ্চালন গতিশীল করে তুলছে যার ফলে নতুন নতুন ইমিউন সেল তৈরি হচ্ছে। ভাইরাসকে হত্যা করতে এটা শরীরের তাপমাত্রাও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

স্বল্প মাত্রার জ্বর, পেশি ব্যথা হতে পারে যেটা খুবই স্বাভাবিক এবং এর জন্য উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। এগুলোর মানে হচ্ছে শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভ্যাকসিনের উপস্থিতির পর প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। একটি কার্যকর ভ্যাকসিনের এটাই লক্ষণ। এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো দু-চারদিন পর নিজে থেকেই দূর হয়ে যায়।

আর যদি এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না দেখা যায় তাতেও চিন্তার কারণ নেই। কারণ এর মানে এই নয় যে টিকা কাজ করছেনা। সেক্ষেত্রে টিকা হয়ত ভিন্নভাবে কাজ করছে।

স্বল্পমেয়াদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি প্রতিক্রিয়ার প্রমাণও পাওয়া গেছে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে। টিকাগুলো কোনো অনাকাঙ্খিত ফল বয়ে আনে কিনা সেটা নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। যেখানে টিকা প্রয়োগের স্থানে ব্যাথা, জ্বর, ফ্যাটিগ বা মাথা ঘোরা, মাথা ব্যাথা, মাংসপেশিতে ব্যথা ও ডায়রিয়া হচ্ছে মধ্যম পর্যায়ের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।

টিকা গ্রহণকারীকে পর্যবেক্ষণের জন্য তাদের টিকা কেন্দ্রে ১৫ থেকে ৩০ মিনিট বসে থেকে অপেক্ষা করতে বলেন চিকিৎসকরা। এর কারণ হচ্ছে যাতে করে হঠাৎ কিছু ঘটে গেলে যেন চিকিৎসকরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারেন।

দীর্ঘ মেয়াদী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

২০২০ সালের ডিসেম্বরে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে দেখা যায় সাধারণত টিকা প্রয়োগের কয়েকদিনের মধ্যেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো দৃশ্যমান হয়। টিকা নেওয়ার পর অনেকেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলেও ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে, কোনো অনুমোদিত ভ্যাকসিনেই করোনাভাইরাসের সক্রিয় জীবাণু দেওয়া হয়নি। এর অর্থ হচ্ছে ব্যক্তি হয়তো একই সময়ে অন্য কোনোভাবে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন।

টিকা প্রয়োগের পর তা অ্যান্টিবডি তৈরি বা ইমিউনিটি তৈরিতে কয়েক সপ্তাহ সময় নেয়। এই সময়ের মধ্যে ব্যক্তি অন্যভাবেও সংশ্লিষ্ট ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যেতে পারেন।