কোন কাজকেই আমরা ছোট করে দেখি না বললেন ২ বিসিএস ক্যাডার ভাই। এমন্টাই ঘটছে রাজশাহী বাঘাতে। রাজশাহীর বাঘায় পিতার ফুটপাতে মিষ্টির দোকানে ঈদের ছুটিতে বাডিতে এসে দোকানদারি করছেন বিসিএস ক্যাডার দুই ভাই। গতকাল সন্ধ্যায় আড়ানী পৌর বাজারের চাল হাটায় পিতার ফুটপাতের এই মিষ্টির দোকানে বসে দুই ভাইকে মিষ্টি বিক্রি করতে দেখা গেছে।
দুই ভাই এর শিক্ষা ও পেশা জীবন জেনে নিন।
অমিত কুমার পাল পেশায় একজন শিক্ষক
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তারা দুই ভাই আড়ানী উচ্চ বিদ্যালয় ও ডিগ্রি কলেজে থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। তারপর অমিত কুমার পাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। পরে তিনি ৩৫ তম বিসিএস পরীক্ষায় পাশ করে সান্তাহার সরকারি কলেজে যোগদান করেন। এই কলেজ থেকে তিনি ১৬৪ তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার চার মাস মেয়াদে বুনিয়াদী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে দেশ সেরা হিসেবে নির্বাচিত হয়ে চেয়ারম্যান অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন।
মৃনাল কুমার পাল মিঠন এমবিবিএ ডাক্তার
এদিকে মৃনাল কুমার পাল মিঠন এমবিবিএস শেষে করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত রয়েছে। তারা রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌর বাজারের স্বর্গীয় হিতেন কুমার পালের নাতী ও বাবু উত্তম কুমার পাল ও বাসনা রানী পালের ছেলে। তাদের বাবা উত্তম কুমার পাল আড়ানী বাজারের ফুটপাতের ক্ষুদ্র মিষ্টি বিক্রেতা। মা গৃহিণী।
বোন মিতা রানী পাল সম্প্রতি সরকারি একটি অফিসের অফিসার পদে যোগদান করেছেন। তারা দুই ভাই ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসে পিতার ফুটপাতের মিষ্টির দোকানে বসে দোকানদারি করেন। এ বিষয়ে অমিত কুমার পাল বলেন, আমরা অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান। বাবা ফুটপাতে মিষ্টি বিক্রি করে দুই ভাই ও এক বোনকে মানুষ করেছেন।
আমি ৩৫তম বিসিএস শিক্ষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে একটি কলেজে যোগদান করেছি। সেখান থেকে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ পরীক্ষায় দেশ সেরা হয়েছি। আমরা কোনো কিছুকে খাটো করে দেখি না। সুযোগ পেলেই দুই ভাই বাবার ফুটপাতের দোকানে বসে সহযোগিতা করি। মৃনাল কুমার পাল মিঠন বলেন, ঈদের ছুটি কাটাতে কর্মস্থল ছেড়ে গ্রামে এসেছি। কিন্তু কি আর করা বাবার ব্যবসা ছোট হলেও রমজান উপলক্ষে দোকানে ভিড় বেড়েছে।
বাবা একা মানুষ কোন দিকে যাবে! এতো কিছু সামলাতে পারছে না, তাই বাবার অন্য ব্যস্ততায় দোকান সামলাতে দুই ভাই সহযোগিতা করছি। সুযোগ পেলেই সহযোগিতা করি। পিতা বাবু উত্তম কুমার পাল বলেন, আমার ছেলে মেয়েদের কখনো ভালো প্রাইভেট, ভালো পোশাক, খাদ্য, ঘুমানোর ভালো জায়গা দিতে পারেনি। আমার ও আমার স্ত্রী বাসনা রানীর সার্বিক প্রচেষ্টায় আজ ছেলে ভালো জায়গায় এসেছে।
প্রতিবেশীরা বলেন ওনার পরিবার আমাদের সমাজের গৌরব, আমরা ও অনাদের কে ভালোবাসি।